যে কারণে ছাড়তে হয়েছিল দেশ, ৮ বছর পর ভারত থেকে ফেরার পর পাওয়া গেল লোমহ’র্ষক বর্ণনা
বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৪:৫৫:০৩ অপরাহ্ন
স্বামীর অ”ত্যাচারে মা’নসিক ভারসাম্য হা’রিয়ে দেশের সীমানা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যায় গাইবান্ধার ফেলানী। সেখানে পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে
জায়গা হয় কা’রাগারের অন্ধকার প্র’কোষ্ঠে। টানা তিন বছর কলকাতায় কা’রাভোগের পর একটি মানবাধিকার সংগঠন জে’ল থেকে মুক্ত করে ফেলানীকে আশ্রয় দেয়।
এমন নি’র্মম প’রিণতির শি’কার ওই নারী টানা আট বছর পর বাড়ি ফিরলেও তত দিনে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তার বাবা। হা’রিয়ে যাওয়ার ৮ বছর পর ভারত থেকে
বাড়ি ফিরে আসার পর ফেলানীকে একনজর দেখতে শত শত মানুষ ভিড় করছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামে।
জানা গেছে, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের সৈয়দ আলীর মেয়ে সাজেদা আক্তার ফেলানীকে বা’ল্যকালেই বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে।
একই ইউনিয়নের খোর্দ্দমালিবাড়ীর দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফয়জার হোসেনের সঙ্গে সংসার বাঁ’ধার পর গাইবান্ধা থেকে ফয়জার হোসেন তার পরিবার-পরিজন নিয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলে যান।
সেখানে গিয়ে ফয়জার দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপরই ফেলানী ফেলনা হয়ে যায় ফয়জারের সংসারে। তার জীবনে নে’মে আসে চরম অ’ত্যা’চার আর অ’বহেলা। একপর্যায়ে স্বামী ফয়জার ফেলানীকে বাবার বাড়িতে রেখে যান। এতে মান’সিক ভা’রসাম্য হারিয়ে ফেলে ফেলানী।
২০১৩ সালের কোন একদিন খোর্দ্দমালিবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্বামীর কাছে যাওয়ার সময় ফটিকছড়ি থেকে হারিয়ে যায় ফেলানী। তখন থেকেই তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো স’ন্ধান পায়নি পরিবারের লোকজন। পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডা’য়েরিও করা হয়। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারে, ফেলানী ভারতে আছে। শেষ পর্যন্ত গত ৩০ জানুয়ারি ভারতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে দীর্ঘ ৮ বছর পর ফেলানী তার নিজ বাড়ি গাইবান্ধায় ফিরে আসে।
ফেলানীর চাচা আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, ২০১৩ সালে স্বামীর কারণে মা’ন’সিক ভারসা’ম্য হা’রিয়ে ফে’লানী ভারতে চলে যান। প্রথমে তিন বছর কলকাতায় কা’রাভো’গের পর ২০১৬ সালে জেল থেকে মু’ক্ত করে ফেলানীকে আশ্রয় দেয় সেখানকার একটি মানবাধিকার সংস্থা। এরপরই তাকে দেশে ফে’রা’নোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গাইবান্ধার বিশিষ্ট সমাজকর্মী অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুমের সহযোগিতায় অবশেষে অনেক চেষ্টা আর নানাভাবে যোগাযোগ করে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তার স্বামী সেই থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেয়নি। হারিয়ে যাওয়া বুকের ধ’ন ফেলানীকে বুকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত তার মা, তেমনিও ফেলানীও অনেক খুশি পরিবারকে খুঁজে পেয়ে। ফেলানী বলেন, পরিবারকে ফিরে পেয়ে আমি অনেক খুশি। একটাই দুঃখ থেকে গেল, বাবার মুখটা আমার দেখা হলো না।